কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সঙ্গে আমরা কম-বেশি সবাই পরিচিত। যারা এই টুল এখনও ব্যবহার করেননি বলে মনে করেছেন, তাঁরাও কিন্তু নিজের অজান্তেই এ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। আপনি যখন ফেসবুক দেখছেন, তখন ফেসবুক অ্যাপের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেমটি আপনার আগ্রহের বিষয়গুলো মুহূর্তের মধ্যেই সংগ্রহ করে আপনাকে দেখাচ্ছে। অর্থাৎ নিজের অজান্তেই এ প্রযুক্তি আপনাকে ঘিরে রেখেছে। বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহৃত হলেও কে প্রথম এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল? বিশ্ববাসীকে কে দেখিয়েছিল যে যন্ত্রকে দিয়েও বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করানো যায়? আপনি হয়তো ওয়াল্টার হ্যারি পিটস এবং অ্যালান ট্যুরিংয়ের নাম শুনেছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুরুর গল্পের নায়ক এই দুজন। ১৯৪৩ সালে প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ধারণাটি দেন তাঁরা। সঙ্গে কিছু মৌলিক তাত্ত্বিক কাজও করেন। কিন্তু সত্যিকারের এমন একটি মেশিন বানিয়ে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন কে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদের একটু পেছনে যেতে হবে।
১৯৫৮ সালের গ্রীষ্মকালে বিশ্বজুড়ে একটি পরিবর্তনের হাওয়া বইছিল। মাত্র তিন বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে। যুদ্ধের পরে যে ক্ষতি হয়েছে, তা বয়ে যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। যুদ্ধ থেমে গেলেও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুরু হয়েছে একটা শীতল যুদ্ধ। বিশেষ করে প্রযুক্তি জগতে কে কার থেকে বেশি এগিয়ে আছে, সেটাই একে অপরকে প্রমাণ করতে ব্যস্ত। মাত্র এক বছর আগে স্পুটনিক উৎক্ষেপণ করে গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়ন। যুক্তরাষ্ট্র বিপরীতে কিছু একটা দেখিয়ে বিশ্ববাসীকে বোঝাতে চাইছে যে তারাও পিছিয়ে নেই। সেই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার স্থাপন করলেন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। পাশাপাশি কম্পিউটার প্রযুক্তিও সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হলো প্রথম কম্পিউটার এনিয়াক। তখন বাণিজ্যিকভাবে কম্পিউটার তৈরির প্রতিযোগিতাও শুরু হয়েছে।